মানুষ লাইফে কি চায়? ভালো-মন্দ খাওয়া, ভালো থাকার জায়গা, আর শান্তি। আমাদের প্রায় সব কিছুই আছে, কিন্তু গেস করুন কি নাই? এক্স্যাক্টলি, শান্তি নাই! মানুষ কত কষ্ট করে, কিন্তু শান্তি পায় না। যেমন ধরেন, আমার বাবা আমাকে রেখে সেন্টমার্টিনে পিকনিকে গেছে—এদিকে আমি বাসায় বসে প্যাঁরা খাচ্ছি! দেখছেন, মানুষের বেদনার শেষ নাই!
এদিকে আমার এক দোস্ত আছে, অর কোনো প্যাঁরা নাই, কিন্তু খালি প্যাঁরা লয়! মানে, সব আছে—মা, বাবা, বয়ফ্রেন্ড—তাও প্যাঁরা লাগে! দেখলেন, মানুষের জীবনে সব থাকলেও, প্যাঁরা নামক জিনিসটা থাকেই! যেমন আমি এইটা লিখতে গিয়া বাংলা টাইপিঙ্গে প্যাঁরা খাইসি।
আমার দোস্ত তাভা
আমার এই গল্পের নায়িকা[নায়িকা বলা ভুল মনে হয় 😊] আমার এক দোস্ত, নাম তাভা। ওরে দেখাইয়ো না, নাহলে ও মাইরা ফেলবে! 😅
আমাদের ফ্রেন্ডশিপ বেশি আগের না, গত বছর ব্রিটিশ কাউন্সিলে পড়ার সময় পরিচয়। প্রথমে ভাবছিলাম, বেডি মনে হয় একটু চিল আছে। পরে দেখি, মামা… এইডা কি! না, আসলে ও খারাপ না, আমি গল্পটা ইন্টারেস্টিং বানানোর জন্য এসব বলতেছি। 😆 যাই হোক, ব্রিটিশ কাউন্সিলে পরিচয়ের পর আস্তে আস্তে ফ্রেন্ডশিপ গাঢ় হলো। একসাথে বসতাম, আড্ডা দিতাম, সব মিলিয়ে ভালোই লাগতো।
প্যাঁরার শুরু…
তাভা একটা জিনিস—ওর সব আছে, কিন্তু সবসময় ডিপ্রেশনে থাকে। ওর প্যাঁরা দুর করার জন্য অনেক চেষ্টা করছি, কিন্তু লাভ হয় নাই। ও নিজেকে সবসময় জন-আউট করে দিত, আমাদের সাথে থাকতে চাইত না। একসময় আমাদের কথাও কমে গেল।
এইদিকে আমার আরেক দোস্ত আছে, নাম তানিদ। ও সবসময় চিল—কিছু হইলেই বলে, "আরে ধুর, চিল কর!" ও অনেক কুল, কারণ সব ধরনের প্রবলেম খুব ইজিলি ডিল করতে পারে। একদিন এর বড় প্রমাণ দিল!
প্রেজেন্টেশন বিপদ!
একদিন ক্লাসের গ্রুপ প্রেজেন্টেশন সাবমিট করতে হবে, আমি গ্রুপ লিডার, কিন্তু ভুলে গেছি! রাতে ব্যাগ গুছাতে গিয়ে মনে পড়লো প্রেজেন্টেশন করি নাই! দিসি তানিদরে ফোন—
আমিঃ ওয়াই তানিদ!
তানিদঃ হ, বল।
আমিঃ একটা বড় বিপদে পড়ছি।
তানিদঃ কি হইসে? কেডা মারা গেসে?
আমিঃ না রে ভাই, কেউ মরে নাই!
তানিদঃ তাহলে তোর প্রবলেম শামাল দিতে পারুম। বল!
আমিঃ ভাই, কালকে প্রেজেন্টেশন, আমি স্লাইড বানাইতে ভুলে গেছি! 😭 এখন কি করুম?
তানিদঃ আরে এইটা কোন বিপদ! একটা কথা বল, এখন কয়টা বাজে?
আমিঃ বেশি না, রাত ২:৪০!
তানিদঃ কিহ! এই রাত্রে তোর মনে পড়ছে প্রেজেন্টেশন?
আমিঃ সরি রে ভাই, আসলেই ভুলে গেছি। বিশ্বাস কর!
তানিদঃ যাক, প্যাঁরা নাই, বিষয়টা দেখতেছি।
ও সত্যিই বিষয়টা দেখলো, এবং পরে প্রেজেন্টেশনে ফার্স্টও হইলাম! (নিউ কারিকুলাম ফান ছিল 😎)
তাভার খোঁজ
এর মধ্যে আমি তাভার খোঁজ নিতে গেলাম। ফোন দিলাম, ধরলো না। আবার তানিদরে ফোন দিলাম—
আমিঃ তাভা কোথায়? আমার ফোন ধরে না!
তানিদঃ তুই প্যাঁরা নিস না, আমি দেখতেছি…
তানিদ অনেক খুন ধরে ট্রাই করে অবশেষে তাভার খোঁজ পেল।
তানিদঃ ওয়াই, তোর খোঁজ নাই? কয়টা ফোন দিছি!
তাভাঃ মনটা খারাপ রে, তাই আর ধরিনি। তোরা তো নিজেদের মতো এনজয় করছোস, তাই আমি আর জ্বালাই নাই।
তানিদঃ পরশু ডিসি হিল আসবি, তরে দিয়া কাজ করামু! যদি না আসিস, আন্টিরে সব বলে দিবো কি কি কর সব কইয়া দিমু কিন্তু কইলাম!
তাভাঃ না না, আম্মুরে কিছু কইস না! আসবো।
পরে তানিদ আমাকেও ফোন দিয়ে বললো, "কাজ আছে।"
সারপ্রাইজ!
পরশুদিন…
তাভা আমারে ফোন দিলো—
তাভাঃ তরে কি আজকে তানিদ ডাকসে?
আমিঃ কই, না তো! ও ত আমারে কইল, তুই আজ বাসা থেকেই বের হবি না!
তাভাঃ ও, আচ্ছা। ঠিক আছে, বাই।
আমিঃ ওকে, বাই।
প্রায় এক ঘণ্টা পর দেখি তাভা ডিসি হিলের সামনে… পুরো জায়গাটা সাজানো!
তাভাঃ তোরা এইটা কি করছিস?! 😳
আমিঃ সারপ্রাইজ!!! 🎉
তাভাঃ তুই না বাসায় থাকবি?
আমিঃ নারে, তুই আসছিস আর আমি আসবো না, এইটা কেম্নে হয়?
তানিদঃ বাই দা ওয়ে, হ্যাপি ফ্রেন্ডশিপ ডে! 😁
তাভাঃ তোদেরও হ্যাপি ফ্রেন্ডশিপ ডে! তোরা আছস বলেই আমি আছি, না হলে অনেক দিন আগে টাটা বাই বাই হয়ে যেতাম। থ্যাংকস রে! ❤️
তারপর সবাই মিলে কেক কাটলাম, অনেক মজা করলাম,গান বাজনা হইল আর রাতে বন জুর এ গেলাম খাইতে
পুরা দিনটাই সেই ছিল! অনেকদিন পর তাভার সাথে ভালো সময় কাটল গেট টুগেটআরও হইল। লাইফের সব প্যাঁরা দূর হয়ে গেল!
[To be continued…]