Chereads / Shimu life story / Chapter 1 - Shimura's life story episode 1

Shimu life story

Farzana_Shimee
  • --
    chs / week
  • --
    NOT RATINGS
  • 1.2k
    Views
Synopsis

Chapter 1 - Shimura's life story episode 1

শিমুর জীবনের শুরুটা হয়েছিল গ্রামে। তখন তার পরিবারে বাবা, মা, ভাই, বোন, দাদা, দাদী সবাই ছিল। সৎ দাদী, ফুফু ও চাচরাও ছিল। শিমুর আপন দাদী যতদিন ছিল ততদিন তার ভালোই কাটছিল দিনগুলো শিমুর নিজের মায়ের সাথে তার সম্পর্কটা ভালো ছিল না। দাদীর সাথে থাকার কারণে। দাদী মারা যাওয়ার পর সে বড় অসহায় হয়ে যায়। এদিকে তার মা বকাবকি করেন। এটা করলে দোষ, ওটা করলে দোষ, তাই সে বেশিরভাগ সময়েই ঘরের বাইরে কাটাত সৎ ফুফুদের সাথে। শিমু যখন ৫ম শ্রেণীতে পড়ে তখন তার দাদী মারা যায়। এভাবে six গেল। অনেক দুঃখ কষ্ট এর মধ্য দিয়ে তার জীবন কাটালো। শিমুর মায়ের সাথে কোনো দিনেই সম্পর্ক ভালো কাটলো না। শুধু দোষ আর দোষ। মায়ের সাথে তার সম্পর্কটা কোনোদিন আর ভালো হলো না। শিমু নিজেই জানে না তার দোষটা কি। এতদিন সব মুখ বন্ধ করে সহ্য করলো। এভাবে ৩৩টা বছর কাটলো। ৩৩ বছরের সময় মায়ের পছন্দ করা ছেলের সাথে বিয়ে হলো। ছেলেটা ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছে। আর শিমু ২ বারে ৩ বারে গেপ দিয়ে HSC পাশ করে। বি, এ ও একইভাবে ২টা সেমিস্টার পাশ করে। এই হলো তার পড়ার ইতিহাস। যে ছেলেটার সাথে বিয়ে হলো তারও ঘরে সৎ মা, ভাই , বোন আছে। শিমু সেটা জানত না। বিয়ের পর শিমু তার স্বামীকে জিজ্ঞেস করলো তোমার ঘরে সৎ মা আছে আর তুমি ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা করেছো আর আমার আম্মা তো আমাকে বলেছে তুমি বি, এ পর্যন্ত পড়েছ। তখন শিমুর স্বামীতো বললো না আমিতো আম্মা ও তোমার ছোট বোনকে বলেছি আমি ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছি তখন তোমার বোন বি, এ কোন কোন subject আছে সেগুলো আমাকে শিখিয়ে দিয়েছিল। ঘরে সৎ মা আছে সেটা তো বলনি। শিমুর স্বামী বলে আমি বলেছিলাম। সৎ মা আছে জানলে আমি বিয়ে করতাম না। আর বিয়েটা শিমুর বিয়ের আগের দিন বিকালে ভেঙে যাচ্ছিল। শিমুর এক বন্ধু ফোন করে শিমুর আম্মাকে বললো, আপনারা এত বড় ফ্যামিলির মানুষ হয়ে রাস্তার একটা ছেলের সাথে কেমন বিয়ে দিচ্ছেন। ছেলের নামে থানায় case আছে। জেলও কাটছে। এই কথা শুনে আর্মির একজন অফিসার ছিল যে এই বিয়েটার সাথে জড়িত ছিল। ওনাকে ফোন করে সব জানানো হলে তখন এই অফিসার শিমুদের বাসায় সন্ধ্যা সময় এসে ছেলের দেশের বাড়ির থানায় ফোন করে দশ বছরের ফাইল দেখালো। দেখলো শিমুর স্বামীর নামে কোনো case নেই। তখন আবার বিয়েটা ঠিক হলো। পরের দিন শিমুর বিয়ে হয়ে গেলো। পরে শিমু জানতে পারলো শিমুর স্বামীর নামে case আছে এবং জেলও কেটেছে। এখানে শুধু নাম পরিবর্তন করার কারনে শিমু কিছুই জানত না। আর শিমুর মা এই ছেলেটাকে পছন্দ করেছে, কারণ ছেলেটি বিয়েতে কিছুই চাইনি। শিমু মেয়েটা এই গুলো মেনেই ছেলেটার সাথে জীবন কাটাতে লাগলো। শিমু ভাবলো মায়ের কাছে আশ্রয় নেই তাই এই ছেলেটার সাথেই তার জীবন কাটিয়ে দেবে। যদিও প্রথম প্রথম ছেলেটির সাথে শুধুই ঝগড়া হতো। বিয়ের পর জানতে পারলো ছেলেটি রাস্তায় ঘুরে ঘুরে বড় হয়েছে। সৎ মায়ের কারনে বাড়িতে থাকতে পারেনাই। আর ছেলেটি নিজের মায়ের বিয়ের জন্য জায়গায় বিয়ে হয়েছে। ২/৩ বার বড় ধরনের ঝগড়া করে শিমু তার সেই মায়ের বাড়িতে আসলো। কারণ শিমু কোনো চাকরি করতো না। তার যাওয়ারও কোনো জায়গা নেই। শিমু তার মায়ের বাড়িতে আসার পর প্রথমদিন শুধু ভালো ব্যাবহার করতো। আর বাকিদিন গুলো শুধুই ঝগড়া করতো। শিমুর মা যেমনে বলে তেমনি চললেও দোষ। ডানে গেলে দোষ, বায়ে গেলে দোষ, সামনে গেলে দোষ। এভাবে ২/৩ বার ছাড়াছাড়ির পর্যায়ে গিয়েও আবার মায়ের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে শিমুই তার স্বামীকে বলতো নিয়ে যাওয়ার জন্য। শিমুর স্বামী বিয়ের প্রথম দিকে ব্যাবসা করতো ব্যাবসা বার খাওয়ার পর টুকটাক মানুষের কাজ করে দিত আর যে টাকা পেত সেটা দিয়ে সংসার চলত। আর শিমুর স্বামীর কথাবার্তা ছিল পুরোটাই রাস্তার বাজে ছেলেদের মতো। বিয়ের ১৬ বছরের মধ্যে প্রথমদিকেই উঠাউঠি শিমুর ৩টা বাচ্চা হয়। ২টা মেয়ে আর একটা ছেলে। বড় মেয়েটা জম্মের ১৪ দিন পর মারা গেলো। মেয়ের ওজন কম হওয়ার কারনে। বকি ২টা ছেলে মেয়ে নিয়ে শিমু অনেক দুঃখ কষ্ট সহ্য করে স্বামীর হাতে খেয়ে জীবন কাটাচ্ছিল। বিয়ের কিছু বছর পর থেকে শিমুর ভাইয়েরা ও বোনেরা টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্য করে আসছিল। কিন্তু শিমুর স্বামী সবটা টাকা নিজের কাছে নিয়ে নিত। নিজের মতো করে কিছু সংসার আর কিছু এদিক সেদিক পরে টাকা দিত। মাঝে মধ্যে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিত। আবার পরে টাকা দিত। ১৪ বছরের শেষের দিকে শিমুর স্বামী শিমুকে না জানিয়ে আরেকটা বিয়ে করে। আর শিমুর কানের দুল বিক্রি করে আর শিমুর ভাইয়েরা যেই টাকা দিত সেটা নিয়ে ২য় বউয়ের কাছে চলে যেত। এই নিয়ে শিমুর স্বামীর সাথে তার প্রতিদিন কথাকাটাকাটি মারামারি হয়। শিমুকে বলে শিমু যেনো তালাক দিয়ে চলে যায়। শিমুর স্বামী বলে সে শিমুকে ছাড়তে পারবে তবুও ওই দ্বিতীয় বউকে ছাড়তে পারবে না। ওই সমস্ত কথা শিমু তার সেই মাকেই বলে আর বলে সে তার স্বামীর সাথে থাকবে না। শিমু তার ভাইকেই জানালে তার ভাই বলে তোমার কিন্তু সেই আগের মা বাবাই আছে তারা কিন্তু বদলায় নাই। এখানে এসে থাকতে পারবা। পারলে এসো তখন আমি বললাম না পারলে অন্য কোথাও চলে যাবো। কিন্তু অন্য কোথাও যেতে পারলো না। ছেলে মেয়ে দুইটার কথা চিন্তা করে। আর এদিকে শিমুর মা আগে যা ছিল এখন তাই আছে। আগে শিমুর মা একাই অত্যাচার করতো। এখন করে কাজের মেয়ে গুলোকে নিয়ে। আমি ঝগড়ার থেকে বাঁচার জন্য যত মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতো ততই শিমুর উপর অত্যাচার বেড়েই চলে।শিমুর আম্মা যখন মিথ্যা কথা গুলো বলে তখন শিমু সত্যিটা বলে তখনই ঝগড়া বাদে।এখন ৬ মাস পর শিমুর স্বামী ২য় বউকে ছেড়ে দিয়েছে নিজের ভুল বুঝতে পেরে শিমুকে ও তার বাচ্চাদের নিতে চাচ্ছে, শিমুও যেতে চায় কারণ সে তার মায়ের সাথে থাকতে পারছেনা।শিমুর মা শুধুই মিথ্যা বলে ঝগড়া বাধায়।শিমুর স্বামীটাও মিথ্যাবাদী।শিমু জানে মানুষের স্বভাব কখনও বদলায়না।তার পরও শিমু যেতে চায়।কারণ তার কষ্ট হলেও বাচ্চা দুটো তো নিজের বাড়িতে শান্তি মত চলতে পারবে।এখন শিমু তার মায়ের বাসা থেকে বের হতে পারলে বাঁচে।শিমু চিন্তা করে শিমু যদি নিজে কিছু করতে পারতো তাহলে শিমু তার স্বামীর কাছেও যেত না।শিমু এখন কান্ত শ্রান্ত একটা মেয়ে।এখন এই ৪৭ বছরের জীবনে যা তার ভাগ্যে ছিল তাই হচ্ছে এখন মানে মানে স্বামীর বাড়ি যেতে পারলে শিমু বাঁচে।শিমুর স্বামীর বাড়িতেই অত্যাচার সহ্য করে বকি জীবনটা কাটাবে।একটা মেয়ে যে কতটা সেটা যে অসহায় সে বোঝে।শিমুর জীবনে এমন একটা সময় সে এখন পাড় করছে যে সেটা আর কেউ বুঝে না।শিমুর মা যে শিমুর সাথে এতকিছু করে সেটা যদি তার অন্য ছেলে মেয়েদের সাথে করতো তাহলে তারা বুঝত।কিন্তু শিমুর সত্যি কথা গুলো কেও বিশ্বাস করে না।শিমুর মায়ের মিথ্যা কথা গুলুই সবাই বিশ্বাস করে।এখন যদি শিমু ঠিকঠাক সব বলতে চায় বলে শেষ করতে পারবেনা।এখন শিমুর মনটা খুব খারাপ তাই সে এই কথা গুলো বলে নিজের মনটা হালকা করে।কেও বিশ্বাস করে না যে নিজের আপন মা নিজের মেয়ের সাথে করতে পারে।মানুষ শুধু ছেলে মেয়েদের দোষ গুলোই দেখে। মা বাবার মাধ্যমেও যে অবহেলিত হয় সেটা শুধু যে অবহেলিত সে বুঝে।